ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে দেশজুড়ে বৃষ্টি। রাজধানী ভেজা ছিলো হেমন্তের অপ্রত্যাশিত বৃষ্টিতে। এমন দিনে নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরেও ছিলো দুস্কর। কিন্তু বৃষ্টি উপেক্ষা করে দেশ নাটক বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) মঞ্চায়ন করলো দলটির দর্শকনন্দিত নাটক "পারো"। এটি ছিলো দলের ২৫তম প্রযোজনার ৯ম প্রদর্শনী।
বৃষ্টিস্নাত সন্ধ্যায় নাটকস্বরণীখ্যাত বেইলি রোডের মহিলা সমিতি মিলনায়তনে মঞ্চায়ন হয় নাটকটি।
ঘটনাক্রমে একা হয়ে যাওয়া এক নারীর দ্বান্দ্বিক জীবনের গল্প নিয়ে রচিত হয়েছে নাটকটি। পারমিতা নামের এই নারীর মনোজগতের দ্বৈত সত্তা উপস্থাপিত হয়েছে প্রযোজনাটির ঘটনাপ্রবাহে। একদিকে পারমিতা অবতীর্ণ হয় প্রতিবাদী ভূমিকায়, অন্যদিকে তার মনের ভেতর জেগে ওঠে আপোসকামিতা। একই সঙ্গে বিপরীতমুখী দুই সত্তার আবির্ভাবে মানসিক বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয় পারমিতার। তৈরি হয় নিজের সঙ্গেই নিজের বিরোধ। জীবনে নেমে আসে টানাপোড়েন। এক সময় রাফি নামের একজনকে জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নিয়েছিল পারমিতা। সুন্দর একটি জীবনের প্রত্যাশায় ঘর বেঁধেছিল তার সঙ্গে। কিন্তু একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাফির সঙ্গে বিরোধ হয় পারমিতার। সেই বিরোধের সূত্র ছিল, পারমিতার অফিসের বস একদিন তার কাঁধের উল্কিতে চুমু খাওয়ার আকাঙ্খা প্রকাশ করে। এতে সে ক্ষুব্ধ হয়ে চাকরি ছেড়ে দিয়ে স্বামী রাফিকে ওই জন্য ব্যবস্থা নিতে বলে। কিন্তু রাফি সে কথায় কর্ণপাত না করে নির্বিকার থাকে। চাকরি করতে গেলে এমন ধরনের ঘটনা একটু আধটু হতেই পারে বলে পারমিতাকে সান্তনা দেয়। এ ঘটনার একপর্যায়ে পারমিতার ভেতরে আরেক সত্তা তাকে আপোস করতে বলে। পারমিতা তার এই অন্তঃপুরের অন্য সত্তাকে সহ্য করতে পারে না। ফলশ্রুতিতে নিজের ভেতর লুকিয়ে থাকা সেই ভিন্ন সত্তাকে গলা টিপে হত্যা করে পারমিতা। এভাবেই এগিয়ে যায় নাটকের কাহিনী।
প্রযোজনাটি রচনার পাশাপাশি নির্দেশনা দিয়েছেন মাসুম রেজা। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমার মনে হয় মানুষের ভেতরে প্রচলিত বিশ্বাসই তাকে পেছনে টেনে ধরে। পরবর্তীতে ওই বিশ্বাসই তার মুক্তির প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়ায়। এই বোধটাকেই আমি পারো নাটকে তুলে ধরেছি।'
নাটকে পারমিতা চরিত্রে একক অভিনয় করেছেন সুষমা সরকার।
বিডি প্রতিদিন/মুসা
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি: জি এম কবির
সম্পাদক: শহীদুল ইসলাম
বার্তা প্রধান: এস এম শফিউল হক