সম্পাদকীয়: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ভূমিদস্যু রিপন মিয়ার কুকর্ম
বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভূমিদস্যুদের উৎপাত দীর্ঘদিনের। তারা ক্রমাগত ভাবে জমি দখল, স্থানীয় মানুষদের হয়রানি এবং স্থানীয় অর্থনীতি ও সামাজিক ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত করতে কার্যক্রম পরিচালনা করে। এর মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রিপন মিয়ার কার্যক্রম উল্লেখযোগ্য। তিনি অত্যন্ত নিকৃষ্ট পন্থায় ভূমি দখল করে, স্থানীয় মানুষদের জীবনে নৈরাজ্যের সৃষ্টি করছেন।
রিপন মিয়া শুধু ভূমি দখলই করছেন না, তিনি মাফিয়া দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কাজ করছেন। বিভিন্ন মিথ্যা মামলা দায়ের করে, আইনকে নিজের আড়ালে রেখে এবং স্থানীয় প্রশাসনের সাথে যোগসাজশ করে তিনি নিজের স্বার্থে কাজ করে চলেছেন। যাদের জমি দখল নিয়েছে , তাদের প্রতি তার কোনো সদিচ্ছাও নেই। বহু পরিবার নিঃস্ব হয়ে পড়েছে, যার ফলে তাদের জীবনযাত্রা মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে।
এছাড়া, রিপন মিয়ার কুকর্ম সমাজে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তার কারণে এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা বিনষ্ট হচ্ছে। স্থানীয় যুবকদের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ভীতি তৈরি হচ্ছে এবং অনেকেই তার অত্যাচারের শিকার হয়ে মানষিক এবং শারীরিকভাবে নিপীড়িত হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে স্থানীয় সরকারের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারা যদি পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।
এখন প্রশ্ন হলো, আমরা কি এর প্রতিবাদে কিছু করতে পারি? সচেতনতা সৃষ্টির প্রয়োজন। স্থানীয় জনগণকে একত্রিত হতে হবে এবং প্রতিবাদে মুখর হতে হবে। সরকার এবং প্রশাসন যদি জনগণের দাবি না শোনে, তাহলে কঠোর প্রতিবাদের মাধ্যমে তাদের অধিকার আদায় করতে হবে।
এছাড়া, মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মাধ্যমে এই ধরনের ঘটনার প্রচার করা জরুরি। সমাজে ভূমিদস্যুপ্রতিবাদের একটি আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। আমরা যদি একত্রিত হয়ে প্রতিরোধ করতে পারি, তাহলে এই ধরনের অপরাধীরা নিজেদের সীমানা ছাড়াতে পারবে না।
বিগত কয়েক বছরে, ভূমি দখলের ঘটনা বাড়ছে, কিন্তু জনগণের প্রতিরোধ কম। রিপন মিয়া বা এ ধরনের অন্যান্য ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে জনগণ যদি একত্রিত হয়ে দাঁড়ায়, তারা প্রমাণ করতে পারবে যে, “ভূমি আমার, অধিকার আমার”। তাদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলে, আমরা আমাদের অধিকার ও সম্মান রক্ষা করতে পারব।
শেষে, সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাই, যেন তারা এই অসংবেদনশীল পরিস্থিতির প্রতি নজর দেন এবং দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেন। ভুক্তভোগীদের নিরাপত্তা এবং তাদের অধিকার রক্ষার জন্য আইনকে সক্রিয় করতে হবে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জনগণ যেন তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত না হয়, সেটিই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত।
এভাবেই আমাদের সমাজের আসল চিত্র তুলে ধরে, ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে সরব হতে হবে। এখনও সময় আছে, আমাদের একসাথে কাজ করতে হবে এবং রিপন মিয়ার মতো ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে আমাদের সবার অধিকার রক্ষা করতে হবে।
এমন একটি পরিস্থিতিতে, যেখানে একজন ভূমিদস্যু জনগণের ভূমি দখল করে নিচ্ছে এবং প্রশাসন ও বিচার ব্যবস্থার যথাযথ পদক্ষেপ না নেয়, সেখানে কোনো উন্নতি আশা করা যায় না। আগামী ভবিষ্যতের জন্য আমাদের সবাইকে সক্রিয় হয়ে কাজ করতে হবে এবং সুস্থ সমাজ গড়ার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে হবে। এটা শুধু ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নয়, সারা দেশের বিষয়। আমাদের একত্র হতে হবে এবং নিশ্চিত করতে হবে, যে এই ধরনের কুক্রমগুলো বন্ধ হয়েছে।