নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি:
২৫শে এপ্রিল, ২০২৫
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার ২১ নং কাইতলা উত্তর ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র নেতা এবং ইউনিয়ন বিএনপি'র সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও সহ-সভাপতি জনাব কামরুজ্জামান মুন্সী (রিয়াজ)-কে গতকাল গভীর রাতে পুলিশ তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করেছে। দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে দায়ের করা এক মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে ও কামরুজ্জামান মুন্সীর পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আনুমানিক দেড়টার সময় নবীনগর থানা পুলিশের একটি দল কাইতলার উত্তরপাড়ায় জনাব মুন্সীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
তবে এই ঘটনাকে রাজনৈতিক বা ব্যক্তিগত প্রতিহিংসার জের বলে দাবি করছে কামরুজ্জামান মুন্সীর পরিবার। তাদের অভিযোগ, স্থানীয় প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা ও জেলা আওয়ামী লীগের একজন ডোনার হিসেবে পরিচিত জনাব রিপন মিয়া মুন্সী এই মামলার নেপথ্যে রয়েছেন।
পরিবারের সদস্যরা জানান, কামরুজ্জামান মুন্সী (রিয়াজ) এবং রিপন মিয়া মুন্সীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছে। রিপন মিয়া মুন্সী জোরপূর্বক রিয়াজ মুন্সীর কিছু জমি দখল করে রেখেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি রিয়াজ মুন্সী সেই জমি পুনরুদ্ধারের জন্য বিভিন্ন দপ্তরে আইনি পদক্ষেপ ও দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন। পরিবারের দাবি, রিয়াজ মুন্সীর এই তৎপরতা বন্ধ করার জন্যই পরিকল্পিতভাবে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে এই মামলা দায়ের করে তাকে গ্রেপ্তার করানো হয়েছে।নবীনগর থানায় কর্মরত একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান , গতকাল রাত আনুমানিক ১১ টার দিকে রিপন মুন্সী ও তার সাথে ৪/৫ জন লোক গারি করে থানায় এসে রিয়াজ মুন্সীর নামে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতে মামলা হয়েছে এবং গ্রেফতারি ওয়ারেন্ট আদেশ নিয়ে আসেন । দ্রুত সময়ে গ্রেফতারের জন্য কয়েক কর্মকর্তার সাথে আর্থিক লেনদেন করে রিপন মুন্সী চলে যান ।এর ঘণ্টা দুয়েক পর নবীনগর পুলিশ থানা থেকে বের হয়ে আনুমানিক ২.২০ এ কামরুজ্জামান কে নিয়ে থানায় আসে ।
কামরুজ্জামান মুন্সী (রিয়াজ) দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় বিএনপি'র রাজনীতিতে সক্রিয় এবং দলের একজন নিবেদিত কর্মী হিসেবে পরিচিত। তার গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
এই বিষয়ে নবীনগর থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে পুলিশ জানিয়েছে, নির্দিষ্ট মামলার ভিত্তিতেই জনাব কামরুজ্জামান মুন্সীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। একদিকে আইনি প্রক্রিয়ায় গ্রেপ্তার, অন্যদিকে পরিবারের পক্ষ থেকে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ – সব মিলিয়ে পরিস্থিতি বেশ ঘোলাটে। প্রকৃত ঘটনা তদন্ত সাপেক্ষে বেরিয়ে আসবে বলে আশা করছেন এলাকাবাসী।